খুন হচ্ছে অসংখ্য গাছ নিরব প্রশাসন ও স্থানীয় মানুষ   এই লক্ষনগুলি দেখলে সতর্ক হন, মাঙ্কিপক্স হতে পারে!   রাজ্যে বাতিল বহু ট্রেন , দেখে নিন তালিকা   ট্রেন বাতিলে ভোগান্তি? চলছে এই ট্রেনগুলি!   ঐতিহাসিক রায়, যৌনপেশাকে আইনি স্বীকৃতি সুপ্রিম কোর্টের   রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী বিবাদ, রাজনৈতিক টানাপোড়েনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ   আগামী শনিবারের মধ্যে ফলপ্রকাশ মাধ্যমিকেরঃ সূত্র   দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি, ভাসবে উত্তরবঙ্গ   বসন্তের আগেই কোকিলহারা দেশ, ছুটি ঘোষণা রাজ্যে   মা ও শিশুর লালন পালনে কয়েকটি টিপস   ২০২১ এর মাধ্যমিক –উচ্চমাধ্যমিকের মূল্যায়ন ও কিছু প্রশ্ন: চৈতালি ঘোষ   ৫ জুলাই থেকে রাজ্যে দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল: একনজরে   #Tauktae: দুরন্ত গতিতে গোয়ায় আঘাত তাওকতের, দেখুন ভিডিও   #Covid-19: জুলাইয়ে মৃতের সংখ্যা চার লক্ষ, তবে কি লকডাউন !   গান্ধিমূর্তির পাদদেশে ধর্নায় মমতা   মাথাভাঙায় বাহিনীর গুলি, মৃত ৪   ১০০ পৌঁছবে না বিজেপি, অমিতের ক্লিপ অসম্পূর্ণঃপ্রশান্ত কিশোর   আনন্দের ' বলি ' দিয়ে শুরু গণতন্ত্রের উৎসব !   #Bike_Trip: অ্যাডভেঞ্চারের আরেক নাম লাদাখ- রাজীব মুখার্জি   লকডাউনে ঋণ-কিস্তিতে ছাড় মিললেও পুরো সুদ মকুব নয়, বলল সুপ্রিম কোর্ট
হারাধনে বিশ্বাস রাখা ছাড়া আর গতি কী!
হারাধনে বিশ্বাস রাখা ছাড়া আর গতি কী!
December 13, 2016, 3:23pm সম্পাদকীয়
প্রধানমন্ত্রী কালোধন ফেরাবেন বলে সকলের ধন কেড়ে নিয়েছেন। যা কিছু ছিল সবই তো জমা। তাই হারাধনে বিশ্বাস রাখা ছাড়া আর গতি কী! লিখছেন সরোজ দরবারনোট নাকচের দিনকালে আচমকাই হারাধন বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা। ভদ্রলোক কে সে পরিচয় না হয় পরে দিচ্ছি। কেননা এই মুহূর্তে তিনি বেজায় বিরক্ত হয়ে আমার দিকেই তাকিয়ে আছেন। বললুম, হয়েছে কী, এমন করে দেখছেন কেন? টাকা তুলতে পারছেন না বুঝি। ভদ্রলোক যারপরনাই রাগত স্বরে বললেন, ‘আর বলবেন না। সে তো সকলেরই সমস্যা। কিন্তু পিতৃদত্ত নামখানা নিয়ে কী ঝামেলায় পড়লুম বলুন দিকি?’ আমাকে ভ্যাবাচাকা দেখে হারাধনবাবু ফের বললেন, এর চেয়ে সবেধন, বোধন, গোধন যা হোক কিছু বলে সম্বোধন করলেই পারত। খামোখা ইয়ারকি কাঁহাতক ভাল লাগে বলুন দেখি! বললুম, খোলসা করেই বলুন না, হয়েছে কী? ভদ্রলোক যা বললেন তাতে তাঁর রেগে না যাওয়ার কারণ নেই। সকালে গিয়েছিলেন মাছের বাজারে। সেখানে কে নাকি তাঁকে বলেছে, দাদা, আপনার উপর বিশ্বাস রাখা ছাড়া আর তো কোনও উপায় দেখতে পাচ্ছি না। ভদ্রলোক বুঝতে না পেরে একটু বেশি কৌতূহলী হয়ে পড়ে ছিলেন। ভেবেছিলেন, এই বাজারে কেউ বোধহয় নকল নোট গছিয়ে গিয়েছে। কিন্তু তিনি তো একশো শতাংশ সৎ। তারই বোধহয় প্রশংসা শুনবেন। কিন্তু কারণ শুনে কান গরম। অপর লোকটির যুক্তি ছিল, ‘প্রধানমন্ত্রী কালোধন ফেরাবেন বলে সকলের ধন কেড়ে নিয়েছেন। যা কিছু ছিল সবই তো জমা। তাই হারাধনে বিশ্বাস রাখা ছাড়া আর গতি কী! এখন আপনিই ভরসা।’নাম নিয়ে সে ঠাট্টাও হজম করে নিয়েছিলেন হারাধনবাবু। সন্ধেয় চা খেতে গিয়েছিলেন পাড়ার দোকানে। সেখানে চেনা ঠেকে গিয়ে আরও এক প্রস্থ ঠেকে গেলেন। কী ব্যাপার? না একজন তাঁকে জিজ্ঞেস করেছেন, মশাই আপনার পিতা কি রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ ছিলেন? তা বাবা রবীন্দ্রনাথের ভক্ত হলে গর্ব না হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু ব্যাখ্যা ছিল এরকম- মোদি যে নোট বাতিল করবেন, আর তাতে সকলেই যে হারাধনবাবু হয়ে উঠবেন এ নাকি রবীন্দ্রনাথ আগেই জানতেন। কী করে? কেন, সেই গান কে না শুনেছে, যেখানে কবি বলেছেন, দিবসে সে ধন হারায়েছি আমি পেয়েছি আঁধার রাতে… দিনে দুপুরে তো নিজের ধন সব হারাতে হচ্ছে। হারাধন বাবু রেগে গিয়ে পাল্টা জিজ্ঞেস করলেন, তা আঁধার রাতে ফিরে পাওয়ার কী হল? সেই ভদ্রলোক মিচকে হেসে বললেন, ‘এই তো আপনাকে পেলাম। না না জোকস অ্যাপার্ট, ওই ‘আঁধার রাতে’-কে আধার হাতে করে দিলেই হবে। মাইক্রো এটিমে লোকে আধার মিলিয়ে টাকা তুলবেন শুনছেন না? আর ব্যাঙ্ক ট্যাঙ্কের পিন-পাসওয়ার্ডও নাকি সব আধার নম্বরে বদলে যাবে।’ তা সেই ভদ্রলোক খুব বিচক্ষণতার সঙ্গে বলেছিলেন, কতবড় রবীন্দ্রভক্ত হলে তবে এই পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে তবে কেউ ছেলের নাম রাখতে পারেন। কিন্তু গোটা দুনিয়ার লোককে নিজের নেমসেক হয়ে যেতে দেখে মোটেও খুশি হতে পারেননি হারাধনবাবু। পিতৃদত্ত নামটার এমন খিল্লি দেখে প্রসঙ্গ ঘোরাতে তিনি বলেছিলেন আরে দায় তো সবারই। মোদি কী করবেন না করবেন, তা রবীন্দ্রনাথ জানতেন এমন ভাবা ভুল। যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে, এখন দেখার এর শেষ কোথায়। ভদ্রলোক বললেন, এ কথাই তো রবীন্দ্রনাথ বিস্তারিত লিখে গিয়েছেন। কেন শোনেননি কবি বলেছেন, ‘ ও যে  কোন্‌ বাঁকে কী ধন দেখাবে, / কোন্‌খানে কী দায় ঠেকাবে–/কোথায় গিয়ে শেষ মেলে যে  ভেবেই না কুলায় রে। ’ সবই নাকি তিনি বলে গিয়েছেন। উপায়ন্তর না দেখে হারাধনবাবু নাকি বলেছিলেন, শুনুন মশাই কালো টাকা, দেশসেবা ওসব ছাড়ুন। আসলে তো ব্যাঙ্কে এক লপ্তে অনেক টাকা ঢুকিয়ে চাঙ্গা করার কৌশল। সে কি আর কেউ বুঝতে পারছে না? এ সব নেহাত হালের রাজনীতি, রবীন্দ্রনাথের আমলের ব্যাপার নয়। তো চা দোকানের সেই রসিক ভদ্রলোক বলেছিলেন, কী ভেবেছেন মশাই রবীন্দ্রনাথকে। উনি কি কম দূরদর্শী নাকি! এ লাইন কি শোনেননি, ‘ আমার  ভাণ্ডার  আছে  ভরে  তোমা – সবাকার ঘরে ঘরে , তোমরা চাহিলে সবে   এ পাত্র অক্ষয় হবে … ।’ মোদি তো তাইই করছেন। অর্থাৎ মোদিও রবীন্দ্রভক্ত। হারাধনবাবুর বাবাও। শুধু হারাধনবাবুর বাবা কচ্চিত দু-এক কলি রবীন্দ্রসংগীত গেয়েছেন। মোদি বোধহয় তা পারেন না। ওই কারণেই দিদির সাজেশন, ছাতি নিয়ে ছাতিমতলায় রবীন্দ্রসংগীত শেখার। আর এইসব অদ্ভুত অনুষঙ্গ আবিষ্কার হওয়ার পরই নিজের নাম নিয়ে বেজায় চটে আছেন হারাধনবাবু।খানিকটা সান্ত্বনা দিয়ে বললুম, দেখুন, নাম তো হলফনামা দিয়ে বদলে ফেলতেই পারেন। কিন্তু এই বয়সে সামান্য এ জিনিসের জন্য নাম খোয়ানোর কোনও মানে হয় কী। বরং  যা হচ্ছে তা একটু খতিয়ে দেখে প্রতিপক্ষকে কুপোকাৎ করে দিন।  হারাধনবাবু লাফিয়ে উঠে বললেন, আরে সেটাই তো বলছি মশাই। এই যে ক্যাশলেস থেকে লেশ ক্যাস ইকোনমি নিয়ে লোকে এত বোলচাল দিচ্ছে, এ কি মোদি না জেটলির আবিষ্কার? আমি বললাম, তবে কার, এখানেও রবীন্দ্রনাথ নাকি? হারাধন বাবু বললেন, দূর মশাই, মধ্যবিত্ত পাবলিক। আরে বাবা,  মাসের অর্ধেক থেকে যে ক্যাশলেস হতে থাকে পকেট আর তখন লেস-ক্যাস ইকোনমিই দস্তুর, এ তো সবাই জানে। সেটাকেই একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পরিবেশন করা হচ্ছে। ভদ্রলোকের যুক্তিতে এমন প্রবল আবেগ ছিল যে না চমকে উপায় নেই। বললুম, তা আপনিও তো কম দূরদর্শী নন, অর্থনীতি নিয়ে পড়ে টড়েছিলেন নাকি। হারাধনবাবু কাঁচুমাচু মুখ করে বললেন, মশাই আপনিও!আর কথা বাড়াইনি। এরপর আর কী করে বলব, আমিও নিজে হলফনামা দিয়ে নিজের নামও পাল্টাব ভাবছিলুম।
   

Leave a Comment

Comments